বাংলার শাসক থেকে শূন্য়ে নেমে আসা সিপিআই(এম)-এর বড় ভরসা এখন যে তিনিই, আবারও একবার তা প্রমাণিত হয়ে গেল। তিনি সিপিআই(এম)-এর যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্য়ায়। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের দাবি অনুসারে - কার্যত নজিরবিহীনভাবে সিপিআই(এম)-এর কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে নিলেন দলের এই তরুণ নেত্রী।
এবছর তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে বসেছিল সিপিআই(এম)-এর ২৪তম পার্টি কংগ্রেস। পাঁচদিনের সেই কর্মসূচি শেষ হয় আজ (রবিবার - ৬ এপ্রিল, ২০২৫)। এই মঞ্চ থেকেই ৮৫ জনের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। তাতে মীনাক্ষী-সহ বাংলার পাঁচজনকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। আবার উলটো দিকে, বয়সজনিত কারণে কমিটি থেকে বাদ যেতে হয়েছে বাংলারই প্রবীণ পাঁচজনকে।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এই মুহূর্তে বঙ্গ সিপিআই(এম)-এ অন্তত মীনাক্ষীর মতো আর কেউ লোক টানতে পারেন না। তাঁর সেই ক্যারিশমাকেই সিপিআই(এম) কাজে লাগাতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে। সামনের বছর বাংলায় ফের ভোট। তার ঠিক আগের বছর মীনাক্ষীর এই 'উন্নতি' তাই নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, মীনাক্ষীর উত্থান মূলত দলের যুবনেত্রী হিসাবে। কিন্তু, সদ্য তিনি ৪০ বছর বয়স পূর্ণ করেছেন। তাই, শীঘ্রই যুবনেত্রীর পদ থেকে সরে যাবেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য় অনুসারে - আগামী জুন মাসে দলের যুব সংগঠনের রাজ্য সম্মেলনে রাজ্য সম্পাদকের পদ ছাড়বেন মীনাক্ষী। একইসঙ্গে, ডিওয়াইএফআই থেকে বেরিয়ে এসে পুরোদস্তুর সিপিআই(এম) নেত্রী হিসাবে মাঠে নামবেন তিনি।
অতীত ঘাঁটলে দেখা যায়, এর আগেও সিপিআই(এম)-এর রাজ্য কমিটিতে মীনাক্ষীর মতো অল্প বয়সীদের জায়গা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, রাজ্যস্তরে যুব আন্দোলন করতে করতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পাওয়ার এহেন ঘটনা নজিরবিহীন! একথা বলছেন দলেরই শীর্ষ নেতারা। অন্যদিকে, আর কিছুদিনের মধ্য়ে সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলী গঠন করা হবে। সূত্রের দাবি, সেখানেও মীনাক্ষীকে জায়গা দেওয়া হতে পারে।
অন্যদিকে, মীনাক্ষী ছাড়াও বাংলা থেকে যে আরও চারটি নতুন মুখ দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে নিয়েছে, সেই তালিকায় রয়েছেন - দার্জিলিংয়ের সমন পাঠক, হুগলির দেবব্রত ঘোষ, পূর্ব বর্ধমানের সৈয়দ হোসেন, নেত্রী কনিনীকা ঘোষ বসু। আর, বয়সজনিত কারণে কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়তে হল - সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেব, অঞ্জু কর, রেখা গোস্বামী এবং অমিয় পাত্রকে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাংলার নতুন পাঁচ মুখের মধ্য়ে মীনাক্ষী ছাড়াও হুগলির ছেলে দেবব্রতকে নিয়ে কম চর্চা হচ্ছে না। বছর তিনেক আগে রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীতে জায়গায় পেয়েছিলেন তিনি। তা নতুন 'নজির' গড়েছিল বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল। আর, এবার তিনি চলে গেলেন একেবারে কেন্দ্রীয় কমিটিতে। যা এর আগে হুগলি জেলার কোনও নেতা করে দেখাতে পারেননি! সূত্রের দাবি, সাংগঠনিক কাজে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেই এই স্থান অর্জন করে নিয়েছেন দেবব্রত।