বিধানসভা নির্বাচনের আগে বড় স্বস্তি পেলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মার্লেনা সিং। তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা রুজু করেছিলেন বিজেপির এক নেতা। কিন্তু, দিল্লির একটি আদালত সেই মামলা খারিজ করে দিল। স্বভাবতই এই ঘটনায় উচ্ছ্বসিত আম আদমি পার্টি (আপ)-র নেতা ও কর্মীরা।
এদিন রাজধানী নগরীর রাউস অ্য়াভিনিউ আদলত অতিশীর বিরুদ্ধে জারি হওয়া সমন খারিজ করে দেয়। মামলাটি শোনার পর বিচারক বলেন, অতিশীর যে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এই মামলা করা হয়েছে, সেটি মোটেও কোনও ব্যক্তি বিশেষকে উদ্দেশ করে করেননি তিনি। তাঁর নিশানায় ছিল সমগ্র একটি বিরোধী রাজনৈতিক দল, কোনও নির্দিষ্ট বা একক ব্যক্তি নন।
এদিন আদালত তার পর্যবেক্ষণে আরও উল্লেখ করে, যেকোনও রাজনৈতিক মানহানি মামলার ক্ষেত্রে প্রমাণের প্রয়োজনীয়তা থাকে সবথেকে বেশি। কারণ এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে বাকস্বাধীনতার বিষয়টি জড়িয়ে থাকে। তাই, সেদিক দিয়ে দেখা হলে, অতিশীকে যে সমন পাঠানো হয়েছে, তাতে বস্তুগত ত্রুটি রয়েছে এবং সেটি দুর্বল। সেই কারণে সেটি বাতিল করা যেতে পারে।
গত বছরের এপ্রিল মাসে দিল্লির তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য ছিলেন আতিশী। সেই সময় তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর সঙ্গে এবং আপ-এর অন্য কয়েকজন নেতার সঙ্গেও বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা যোগাযোগ করেছেন। তাঁরা নাকি অতিশীকে ভয় দেখিয়েছিলেন, যদি তিনি বিজেপিতে যোগদান না করেন, তাহলে একমাসের মধ্য়ে তাঁকে ইডি গ্রেফতার করবে।
অতিশী এই দাবি করার পরই তাঁর বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা রুজু করা হয়ে। মামলাটি করেন প্রবীণ শঙ্কর কাপুর নামে এক বিজেপি নেতা। তাঁর অভিযোগ ছিল, অতিশী এবং তাঁর দলীয় সহকর্মীরা যে দাবি করছেন, তা একেবারেই মিথ্য়া ও ভিত্তিহীন।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে অতিশীকে সমন পাঠানো হয় আদালতের তরফে। অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া বামনিয়াল এই সমন বা অর্ডার পাস করেন। সেখানে বিজেপি নেতার নেতার অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট মন্তব্যের সঙ্গে অতিশীর যুক্ত থাকার বিষয়টি ওঠে।
আদালতের পূর্বের সেই অর্ডারের প্রেক্ষিতে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের বিচারক উপরোক্ত ত্রুটিগুলি তুলে ধরেন। এবং ২০ হাজার টাকা বন্ডের বিনিময়ে আদালত অতিশীর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে।
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের প্রায় এক সপ্তাহ আগে এই ঘটনা আপ নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের মনোবল নিঃসন্দেহে বাড়াবে। আপ চাইলে নির্বাচনী প্রচারেও এই ঘটনা উল্লেখ করে বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলতে পারে।