বিজ্ঞান জগতে ভারতের জয়-জয়কার। প্রতি বছরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্র জুড়ে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী বিজ্ঞানী-গবেষকদের একটি তালিকা তৈরি করে। এলসেভিয়ারের সহযোগিতায় এবারও তা প্রকাশ করেছে স্ট্যানফোর্ড। দেখা যাচ্ছে, সেই তালিকার প্রথম ২ শতংশ গবেষকদের মধ্যেই রয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক আল্লাম শ্রীনিবাস রাওয়ের নাম। বর্তমানে তিনি বিক্রম সিংহপুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
আরও পড়ুন-Putin India Visit: যুদ্ধ আবহে ভারত সফরে আসবেন পুতিন! মোদীর সঙ্গে কোন সমীকরণের ইঙ্গিত?
অধ্যাপক আল্লাম শ্রীনিবাস রাও ফোটোনিক্স গবেষণায় তার অসামান্য অবদানের জন্য এই স্বীকৃতি পেয়েছেন।স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি বার্ষিক র্যাঙ্কিং অনুসারে, পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক আল্লাম শ্রীনিবাস রাওয়ের নাম ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত টানা চার বছর ধরে বিশ্বব্যাপী শীর্ষ দুই শতাংশ বিজ্ঞানীর মধ্যে রয়েছে। তার গবেষণার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে ২৫০ টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। জানা গেছে, অন্ধ্রপ্রদেশের প্রকাশম জেলার এক সাধারণ পরিবার জন্ম অধ্যাপক শ্রীনিবাস রাওয়ের। সম্প্রতি বিক্রম সিংহপুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত হন। তার আগে তিনি বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন প্রশাসনিক ও একাডেমিক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই স্বীকৃতির জন্য অধ্যাপক বলেন, 'আমার গবেষণা আলোক তরঙ্গের পদার্থবিদ্যা, ফোটোনিক্স অন্বেষণ করে। যখন তড়িৎ চৌম্বকীয় বিকিরণ কোনও পদার্থে প্রবেশ করে, তখন পদার্থের গঠন এবং এর আণবিক বা পারমাণবিক গঠন নির্গত বিকিরণের বৈশিষ্ট্যগুলিকে প্রভাবিত করে।' তিনি আরও বলেন, গবেষণাকে সক্রিয়ভাবে বাজারজাতযোগ্য পণ্যে রূপান্তরিত করা উচিত। এর ফলে আরও পেটেন্ট এবং উদ্ভাবন তৈরি হবে। এটি শিক্ষা খাতে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি প্রবর্তন করবে। ১৫০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতের বৈজ্ঞানিক ও অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন করা উচিত এবং দারিদ্র্যসীমার নীচে জনসংখ্যা হ্রাস করা উচিত। উচ্চশিক্ষা এই লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক আল্লাম শ্রীনিবাস রাও কেএলসি বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। সেখানে দীর্ঘ ১৪ বছর কাজ করেছেন তিনি। বিভাগীয় প্রধান হিসেবে পদোন্নতি হয় তাঁর। পরে তিনি দিল্লি টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। তার নির্দেশনায়, ২৪ জন পিএইচডি স্কলার, তিনজন পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো এবং চারজন এমফিল পড়ুয়া সফলভাবে তাদের গবেষণা সম্পন্ন করেছেন। তিনি কাডাপার যোগী ভেমনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনচার্জ ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন-Putin India Visit: যুদ্ধ আবহে ভারত সফরে আসবেন পুতিন! মোদীর সঙ্গে কোন সমীকরণের ইঙ্গিত?
উল্লেখ্য, এই র্যাঙ্কিং শুধুমাত্র কৃতী অধ্যাপক আল্লাম শ্রীনিবাস রাওয়ের ব্যক্তিগত সাফল্যই নয়, সেই সঙ্গে গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতামূলক মনোভাব এবং প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থনের সাফল্যও বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞান ক্ষেত্রে ভারতের প্রভাব যে ক্রমে বাড়ছে, তার প্রমাণ বলে মনে করা হচ্ছে। শ্বাসযন্ত্রের বিজ্ঞান থেকে গণিত বা রসায়ন – বিজ্ঞানের সমস্ত ক্ষেত্রে দেশের গবেষকদের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী গবেষণা ও উদ্ভাবনের একটি পাওয়ার হাউস হিসাবে উত্থান ঘটছে ভারতের।