সেটা ছিল ১৯৮৫ সাল, সেই বছরের ৮ মার্চ নারীদিবসের দিন সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন নীতা দালাল (বিয়ের আগের পদবী) ও মুকেশ আম্বানি। তারপর দেখতে দেখতে ৪০টা বছর একসঙ্গে কাটিয়ে ফেলেছেন দেশের সবথেকে ধনী এই দম্পতি। হ্যাঁ, আজ নীতা-মুকেশ আম্বানির ৪০তম বিবাহবার্ষিকী। বিয়ের দিন ঠিক কীভাবে সেজেছিলেন নীতা? চলুন ফিরে দেখা যাক 'পুরানো সেই দিনের কথা'-তে।
বিয়ের দিন ঠিক কীভাবে সেজেছিলেন নীতা?
নীতা আম্বানি নিজের বিয়ের দিন খুবই ছিমছাম সাধারণ সাজেই সেজেছিলেন। তাঁর সেই নববধূ-র সাজ ছিল সাধারণ অথচ মার্জিত, আবার একই সঙ্গে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশ্রণ। যে পোশাকে ছিল আঞ্চলিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্যপূর্ণ ঐতিহ্য। নীতা সূক্ষ্ম টাই-এন্ড-ডাই বাঁধনির কাজে সজ্জিত দুটি শাড়ি একসঙ্গে পরেছিলেন - একটি পানেতার শাড়ি যেটি কিনা তাঁর মায়ের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পরেছিলেন। আর অপরটি ছিল ঘরচোলা, সেটি তিনি তাঁর স্বামীর পরিবারকে সম্মান জানাতে পরেছিলেন। চলুন ফিরে দেখা যাক নীতা আম্বানির সেই বিয়ের পোশাক।
প্রসঙ্গত ঘরচোলা ও পানেতার দুটিই গুজরাটি বিয়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। পানেতা একটি লাল বা মেরুন পাড় সঙ্গে একটি সাদা বা আইভরি সিল্ক শাড়ি হয়। ঘরচোলা শাড়ির পাড় হয় লাল ও সোনালি। পানেতার কনের পরিবারের তরফে উপহারে দেওয়া হয় আর ঘরচোলা বরের পরিবারের বরের তরফে আসে, যে শাড়িতে নতুন বাড়িতে নববধূকে স্বাগত জানানো হয়।
নীতা আম্বানি তাঁর বিয়ের সাজ আরও সুন্দর হয়ে উঠেছিল, তাঁর হাতে থাকে ঐতিহ্যবাহী হাতের চুড়ি, হাত ফুল, আর একটা হাফমুন টিকলি, নাকের নথ। মেকআপের সঙ্গে তাঁর কপালে ঐতিহ্যবাহী পিয়ার বিন্ডিস, চোখে মাস্কারা-অতিরিক্ত আই ল্যাশ যোগ করা হয়েছিল। সুন্দরকরে আঁকা হয়েছিল ভ্রু, তবে সাজসজ্জায় অতিরিক্ত কিছুই ছিল না। সবশেষে তাঁর মাথার চুল খোঁপা করে বাঁধা হয়েছিল।
নীতা আম্বানি এবং মুকেশ আম্বানির প্রেম
আম্বানি একজন প্রশিক্ষিত ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী। জানা যায়, ১৯৮৪ সালে তাঁর নাচের পারফরম্যান্স দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন মুকেশ আম্বানির মা কোকিলাবেন আম্বানি এবং বাবা ধীরুভাই আম্বানি। এরপরই তিনি নীতার বাবাকে ফোন করে সরাসরি বড় ছেলের সঙ্গে নীতার বিয়ের প্রস্তাব দেন। যদিও দেশের প্রথম সারির শিল্পপতির পরিবারের তরফে মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে একটু ঘাবড়েই দিয়েছিলেন নীতার বাবা, কিছুটা দ্বিধাতেও ছিলেন তিনি।
পরে একদিন নীতাকে সঙ্গে নিয়ে মুম্বইয়ের পেডার রোডে গাড়ি চালানোর সময় মুকেশ আম্বানিই হঠাৎ করে বিয়ের প্রস্তাব দেন। হ্যাঁ, নাকি না-এ উত্তর জানাতে বলেন। সেসময় ট্রাফিক সিগন্যালে গাড়ি থামিয়েছিলেন মুকেশ। এরপর তিনি যখন নীতার উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখন চারিদিক থেকে লোকজন চিৎকার করছিল ও হর্ন বাজাচ্ছিল। তবে শেষপর্যন্ত উত্তরটা হ্যাঁ-ই হয়। একথা সিমি গারেওয়ালের শোতে এসে নিজেই জানিয়েছিলেন মুকেশ আম্বানি।