বিরাট কোহলির কীর্তির পুনরাবৃত্তি করলেন ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা দলের ক্যাপ্টেন নিকি প্রসাদ। রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি বিরাট কোহলির কীর্তির পুনরাবৃত্তি করলেন নিকি প্রসাদ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ফাইনালে জয়ী হয়ে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা দল বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছে। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের বায়ুয়েমাস ওভালে নিকি প্রসাদের দল উল্লাসে মাতল, নিজেদের কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন সেলিব্রেশন করল তারা।
শক্তিশালী ভারতীয় দল নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে পরপর দ্বিতীয়বারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা জিতল। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নয় উইকেটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করল তারা, যা ক্রিকেটের অন্যতম সেরা যুব কাঠামোর প্রতিফলন।
ফাইনালে ওঠার পথে প্রতিটি প্রতিপক্ষকে হারানোর পর, ভারত আবারও নিজেদের আধিপত্য দেখাল। তারা ৫২ বল হাতে রেখেই ফাইনাল ম্যাচে জয় নিশ্চিত করল এবং একটিও ম্যাচ না হেরে শিরোপা জেতার প্রথম দল হিসেবে ইতিহাস গড়ল।
নিকি প্রসাদ ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনায় বলেছেন যে, তারা সকলেই শান্ত থাকার চেষ্টা করেছিলেন, মাটিতে পা রেখে নিজেদের কাজ করে গিয়েছেন তাঁরা। তারা মাঠে গিয়ে তাদের সামর্থ্য দেখাতে চেয়েছিলেন। বিসিসিআইকে ধন্যবাদ জানিয়ছেন তাঁরা। তারা তাদের সেরা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য।
জয়ের পর ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন নিকি প্রসাদ বলেন, ‘এই জয় আমাদের জন্য বিশেষ এক মুহূর্ত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শান্ত থাকার চেষ্টা করেছি, মাটিতে পা রেখে খেলেছি এবং নিজেদের কাজটাই করেছি। আমরা আমাদের সামর্থ্য দেখাতে চেয়েছিলাম। বিসিসিআইকে ধন্যবাদ, আমাদের সেরা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য। আমি খুশি যে আমি ভারতের শীর্ষস্থানে থাকা নিশ্চিত করতে পারছি। এটি সত্যিই বিশেষ এক মুহূর্ত।’
আরও পড়ুন… Guinness World Records title: সবচেয়ে দূরে কুঠার নিক্ষেপ করে ইতিহাস গড়লেন ওসমান গুরচু
ভারতের বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দেন গোঙ্গাদি তৃষা, যিনি ৩/১৫ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে মাত্র ৮২ রানে আটকে দেন। অন্য প্রধান বোলারদের মধ্যে ছিলেন বৈষ্ণবী শর্মা, আয়ুষী শুক্লা এবং পারুনিকা সিসোদিয়া। নিকি প্রসাদ আরও বলেন, ‘টুর্নামেন্টের শুরুতে আমি বলেছিলাম, আমরা এখানে আধিপত্য বিস্তার করতে এসেছি, নিশ্চিত করতে এসেছি যে ভারত শীর্ষে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকান দল দুর্দান্ত খেলেছে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে খেলছি, তারা যে দৃঢ়চেতা মনোভাব দেখিয়েছে তা প্রশংসার যোগ্য। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সত্যিই দারুণ অভিজ্ঞতা।’
অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠা তাদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকল, যদিও তারা ট্রফি জিততে পারেনি।দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাপ্টেন রেনেক বলেন, ‘দলের মধ্যে অনেক আবেগ কাজ করছে, তবে আমি আমাদের দল এবং ম্যানেজমেন্টের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করব। আমরা এই মুহূর্তের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ট্রফি নিয়ে ফিরতে পারলাম না, তবে আমাদের প্রথম ফাইনালে ওঠাটা গর্বের বিষয়। ক্রিকেট একটি দলীয় খেলা, আমি একা এটা করতে পারতাম না। ম্যানেজমেন্ট এবং দলের সবার অবদান রয়েছে। ২০২৭ সালে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসব।’ তিনি আরও বলেন, ‘মা-বাবা, ট্রফি নিয়ে ফিরতে পারছি না, তবে আমার পদক আছে।’
গোঙ্গাদি তৃষার অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছেন এবং তিনি প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট এবং প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন। এরপরে গোঙ্গাদি তৃষা বলেন, ‘আমি এই পুরস্কার আমার বাবাকে উৎসর্গ করতে চাই, যিনি এখানে উপস্থিত আছেন। আমি সবসময় নিজেকে একজন অলরাউন্ডার হিসেবে দেখি। আমার লক্ষ্য দেশের হয়ে খেলতে এবং আরও ম্যাচ জেতানো।’ তৃষা আরও বলেন, ‘এটি আমার জন্য সবকিছু, আমি এখন কিছু বলার অবস্থায় নেই। আমাকে সমর্থন করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। পরিকল্পনা ছিল নিজের শক্তির ওপর নির্ভর করা, আজও সেটাই করেছি। আমি সবসময় মিতালি দি-কে (সাবেক অধিনায়ক মিতালি রাজ) অনুসরণ করি।’