আবার বিতর্কে জড়িয়ে পড়ল রবীন্দ্র সরোবর। দক্ষিণ কলকাতার ফুসফুস বলা হয়ে এই রবীন্দ্র সরোবরের লেক–কে। সেখানে এই রবীন্দ্র সরোবরের কোর এরিয়ার ভিতরে এবার বেআইনি নির্মাণ করার অভিযোগ উঠল। আর এই অভিযোগ উঠেছে স্বয়ং কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তাতে এখন ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এমন ঘটনা কেমন করে ঘটল? উঠছে প্রশ্ন। এখানে আসা পরিবেশবিদরা এবং স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। এই রবীন্দ্র সরোবরের পরিবেশ রক্ষার ভার রয়েছে কেএমডিএ’র হাতে। আর তারাই এমন কাণ্ড করল!
রবীন্দ্র সরোবরের গায়ে জাতীয় লেকের তকমা রয়েছে। পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, রবীন্দ্র সরোবর উদ্যানের ভিতরে আছে দুর্গা মিউজিয়াম। ঠিক তার পাশেই নতুন করে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই নতুন ঘরগুলিতে আরও কয়েকটি দুর্গাপ্রতিমা রাখা হবে। তাই মাটি খুঁড়ে নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে। এই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন পরিবেশপ্রেমীরা। পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, রবীন্দ্র সরোবরের ভিতরে একের পর এক নির্মাণকাজ চলছে। সেগুলি বেআইনি। আর তার জেরে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এখানে শীতের শুরুতে পরিযায়ী পাখিরা আসে। কিন্তু এমন নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় পরিযায়ী পাখিরা নাও আসতে পারে।
আরও পড়ুন: মিড–ডে মিল প্রকল্পে দুঃখের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের যৎসামান্য বরাদ্দ বৃদ্ধি, তোপ ব্রাত্যর
স্থানীয় সূত্রে খবর, এই দুর্গাপ্রতিমাগুলি রেড রোডে হওয়া কার্নিভালে সেরা পুরষ্কার পেয়েছে। তাই সেই প্রতিমাগুলিকে এখানে রেখে মিউজিয়াম করা হয়েছে। লেক লাভার্স ফোরামের নেত্রী সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনা দেখে বলেন, ‘রবীন্দ্র সরোবর জাতীয় জলাশয়ের স্বীকৃতি পেয়েছে। ন্যাশনাল লেক কনজার্ভেশন পলিসি মেনে রবীন্দ্র সরোবর সংরক্ষিত থাকার কথা। সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। রবীন্দ্র সরোবরের কোর এরিয়ার ভিতরে কোনও নির্মাণকাজ করা নিষিদ্ধ। জাতীয় পরিবেশ আদালতও একই কথা বলেছে। কিন্তু কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ তা মানছেন না।’
এই ঘটনা নিয়ে যদি মামলা হয় তাহলে রাজ্য সরকারকে কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। কেন কেএমডিএ এমন কাজ করল? জবাব দিতে হবে। আর পাঁচটা লেকের সঙ্গে রবীন্দ্র সরোবর লেকের তুলনা চলে না। এটার একটা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট আছে। পরিবেশ বিধি লঙ্ঘন করে রবীন্দ্র সরোবরের ভিতরে একের পর এক নির্মাণ চলছে বলে জোরদার অভিযোগ উঠছে। যদিও কেএমডিএ’র এক অফিসারের কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রবীন্দ্র সরোবরের ভিতর যে দুর্গা মিউজিয়াম রয়েছে সেটারই সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। পরিবেশবিধি মেনেই সেই কাজ হচ্ছে। কোনও বেআইনি কাজ হচ্ছে না।’