প্রাথমিকে নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বহাল রাখা হল কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়। শুক্রবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি পিএস নরসীমা এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ যে রায় দিয়েছে, তাতে ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষক প্রক্রিয়ায় সেইসব প্রার্থীরাও অংশগ্রহণ করতে পারবেন, যাঁরা ওই শিক্ষাবর্ষে (২০২০-২০২২) ডিএলএডের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। অর্থাৎ যখন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল, সেইসময় ডিএলএড প্রশিক্ষণের শংসাপত্র না পেলেও ২০২০-২০২২ শিক্ষাবর্ষের প্রার্থীরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
আর সেই বিষয়টা নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময়ও বলেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল যে ২০২০-২২ শিক্ষাবর্ষে যে প্রার্থীরা ডিএলএড প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁরা নিয়োগের পরীক্ষায় বসতে পারবেন।
পর্ষদের পক্ষে রায় দিয়েছিল সিঙ্গল বেঞ্চ
যদিও পর্ষদের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তাতে অবশ্য পর্ষদেরই জয় হয়েছিল। হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ২০২০-২২ শিক্ষাবর্ষের যে প্রার্থীদের নিয়োগে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের ২০২২ সালের জুনেই কোর্স শেষ হয়ে যাচ্ছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে হয়ে যাচ্ছে পরীক্ষাও। তাই তাঁরাও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ।
শংসাপত্র না পেলে যোগ্য বলে বিবেচিত নন, বলা হয়েছিল রায়ে
যদিও সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের বেঞ্চ জানিয়েছিল, ২০২২ সালের জুনে কোর্স শেষ হলেও ডিএলএডের প্রশিক্ষণরত প্রার্থীরা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় শংসাপত্র পাননি। যতক্ষণ না তাঁরা শংসাপত্র পাচ্ছেন, ততক্ষণ তাঁদের যোগ্য বলে বিবেচনা করা যায় না।
সেইসঙ্গে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশনের (এনসিটিআই) নিয়মে স্পষ্টভাবে বলা আছে যে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং প্রশিক্ষণ ছাড়া শিক্ষক হওয়া যাবে না। সেই পরিস্থিতিতে সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি।
স্বস্তি পেলেন প্রার্থীরা
সেই রায়ের বিরুদ্ধে আবার সুপ্রিম কোর্টে যান কয়েকজন ডিএলএড প্রার্থী। সেই মামলায় আজ রায় দিল শীর্ষ আদালত। আর তাতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। স্বস্তি পেয়েছেন ২০২০-২০২২ সালের ডিএলএডের প্রশিক্ষণরত প্রার্থীরা।