খড়্গপুরে রয়েছে রেলের ৬৭৭ নম্বর বাংলো। যেখানে ২০১৭ সাল থেকে থাকেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। এই প্রাক্তন সাংসদের দাবি ছিল, বন্ধু তুষারকান্তি ঘোষ তাঁকে ওই বাংলো ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন। মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদকে সেই বাংলোই এবার ছেড়ে দিতে হবে। রেলের ওই বাংলো নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠছিল অনেকদিন ধরেই। ওই এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব বারবার অভিযোগ জানানোয় এবার বাংলো ছাড়ার নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হল। এটা যে দিলীপ ঘোষের উদ্দেশে তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি। আজ, বৃহস্পতিবার ওই নোটিশ তাঁকে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এই অভিযোগ সামনে আসতেই এলাকা সরগরম হয়ে উঠেছে। পদক্ষেপ নিয়ে রেল খড়গপুর ডিভিশনের এস্টেট অফিস অ্যান্ড কোর্টের পক্ষ থেকে একটি নোটিশ দেওয়া হল। দিলীপ ঘোষের বসবাসকারী বাংলো অবিলম্বে খালি করে দিতে হবে বলে উল্লেখ করা রয়েছে নোটিশে। আর নোটিশে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ৩১ মার্চের পর থেকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বাংলো দখল করে রয়েছেন প্যাসেঞ্জার সার্ভিস কমিটির প্রাক্তন সদস্য তুষারকান্তি ঘোষের বন্ধু দিলীপ ঘোষ। বাংলোর দেওয়ালে রেলের পক্ষ থেকে আজ নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেখানে উল্লেখ রয়েছে, সাউথ সাইডের ৬৭৭ নম্বর বাংলো খালি করে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ, মামলা দায়ের কলকাতা হাইকোর্টে
অন্যদিকে অবৈধভাবে দখল করা হয়েছিল ৬৭৭ নম্বর বাংলো বলে অভিযোগ। এবার নোটিশ দিয়ে তুষারকান্তি ঘোষকেও শোকজ করেছে রেল। বলা হয়েছে, সশরীরে হাজির হয়ে তাঁকে উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। মেদিনীপুরের সাংসদ ছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেই সূত্রে খড়্গপুরে যাতায়াত দীর্ঘদিন ধরেই। এখন সাংসদ না থাকলেও মেদিনীপুরকে নিজের ঘাঁটি বলে থাকেন দিলীপ ঘোষ। সেখানেই রেলের একটি বাংলোয় থাকতেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। সেটি এখন অবিলম্বে খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিলীপ ঘোষ এই বাংলোতে থাকলেও কোনও ভাড়া দেননি বলে অভিযোগ। তাই এবার বাংলো খালি করে দেওয়ার জন্য নোটিশ পাঠানো হল।
এছাড়া ২০২০ সালের ৩১ মার্চের পর তুষারকান্তি ঘোষ অথবা কারও নামেই ওই ৬৭৭ নম্বর বাংলো বরাদ্দ করা হয়নি বলে আরটিআই করার জবাবে জানায় রেল। গত ৫ এপ্রিল এই বিষয়ই প্রকাশ্যে আসে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দেবাশিস চৌধুরীর করা একটি আরটিআইয়ের জবাবে। তারপরই শুরু হয় বিতর্ক। যদিও ওই দিনই ডিআরএম কে.আর চৌধুরী বলেন, ‘আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’ আজ, বৃহস্পতিবার অবশেষে তা করা হল। এবার এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সহ–সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর বক্তব্য, ‘সত্যের জয় হল। অনেক বড় বড় কথা বলতেন দিলীপ ঘোষ। এখন কী বলবেন? বিদ্যুতের বিল–সহ কোনওরকম ভাড়া না দিয়েই জবরদখল করে রেখেছিলেন এতদিন। ওঁর জন্য এখন বিপদে পড়লেন তুষারকান্তি ঘোষ।’