আমাদের মধ্যে কেউ কেউ খুব ছোটোখাটো বিষয়েও চোখ দিয়ে জল ঝরিয়ে ফেলেন। তবে, চোখের জন্য কান্না অপরিহার্য। আপনি জেনে অবাক হবেন যে 'অশ্রু' চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা আমাদের পৃথিবী দেখতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে যাদের প্রচুর কান্নার অভ্যাস আছে তাদের চোখের সংক্রমণের ঝুঁকি খুব কম থাকে।বেশি কাঁদা ভালো নাকি খারাপব্যাকটেরিওলাইটিক এনজাইমবিজ্ঞান বিষয়ক চিকিৎসা সংক্রান্ত বই এবং নিবন্ধ অধ্যয়নকারী ওয়েবসাইট সায়েন্স ডাইরেক্টের মতে, লাইসোজাইম হল একটি ব্যাকটেরিওলাইটিক এনজাইম যা আমাদের শরীরের লালা, অশ্রু এবং শ্লেষ্মায় পাওয়া যায়। এটি ব্যাকটেরিয়ার প্রাচীর ভেঙে ধ্বংস করে, ফলে আমাদের শরীর সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।চোখের জল চোখের জন্য ভালোযারা খুব বেশি কাঁদেন তাঁদের চোখের সংক্রমণ খুব কমই দেখা যায়। কান্নার ফলে চোখ থেকে লাইসোজাইম নামক একটি উপাদান নিঃসৃত হয়, যা চোখের জন্য স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। অশ্রু চোখকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। এগুলো কেবল চোখকে ব্যাকটেরিয়া এবং অ্যালার্জি থেকে রক্ষা করে না বরং চোখে প্রবেশ করা সূক্ষ্ম ধুলোও ধুয়ে ফেলে। এই ক্ষেত্রে, জ্বালা এবং সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস পায়।চোখে শুষ্কতাঅশ্রু কেবল চোখকে সুস্থ রাখে না, বরং আবেগগত ও মানসিক স্বস্তিও দেয়। অনেক ডাক্তার বলেন যে অতিরিক্ত কান্না চোখে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যা চোখের স্বাভাবিক অশ্রু ভারসাম্যের জন্যও সমস্যা তৈরি করতে পারে, যার ফলে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়।দূষণের মতো সমস্যাতিন ধরণের অশ্রুও রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বেসাল অশ্রু, রিফ্লেক্স অশ্রু এবং আবেগগত অশ্রু। চোখকে তৈলাক্ত এবং সুরক্ষিত রাখার জন্য চোখে ক্রমাগত বেসাল টিয়ার তৈরি হতে থাকে। এটি একটি পাতলা স্তর তৈরি করে যা চোখকে বাতাস, ধুলো এবং দূষণের মতো সমস্যা থেকে রক্ষা করে।কান্না এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে সম্পর্কআজকাল মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং কান্নার ভূমিকাও এতে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। যারা খোলাখুলি কাঁদেন তাঁরা বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগের মতো মানসিক সমস্যা থেকে দ্রুত সেরে উঠতে পারেন। একটি গবেষণা অনুসারে, যারা নিজ আবেগ দমন করেন, তাঁদের উচ্চ রক্তচাপ, মানসিক চাপ এবং অন্যান্য মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। একই সঙ্গে, যারা মাঝে মাঝে কাঁদেন তাঁদের আবেগকে আরও ভালভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হন এবং মানসিকভাবে আরও ভারসাম্যপূর্ণ থাকেন।
