পরবর্তী খবর
‘উপহারের মতো সন্তান আমাদের জীবনে আসে, আমরা সাদরে গ্রহণ করি…’! মাতৃ দিবসে অকপট ‘মিশকা’ অহনা দত্ত
3 মিনিটে পড়ুন . Updated: 11 May 2025, 03:23 PM IST
Share 
বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > ‘উপহারের মতো সন্তান আমাদের জীবনে আসে, আমরা সাদরে গ্রহণ করি…’! মাতৃ দিবসে অকপট ‘মিশকা’ অহনা দত্ত
Share
যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলেও দেশের পরিস্থিতি এখনও বেশ উতপ্ত। আগের থেকে খানিক স্থিতিশীল হলেও সীমান্তবর্তী এলাকায় এখনও বেশ উত্তেজনার একটা পরিবেশ রয়েছে। এই অস্থির সময়েই মা হতে চলেছেন অহনা দত্ত। আর কয়েক মাসের মধ্যে ভূমিষ্ঠ হবে তাঁর সন্তান। কিন্তু দেশের এই পরিস্থিতির মধ্যে সন্তানের জন্ম মা হিসেবে কতটা ভাবিয়েছে অহনাকে? মাতৃ দিবসে হিন্দুস্থান টাইমস বাংলার সঙ্গে ভাগ করে নিলেন অহনা দত্ত।
অহনার কথায়, ‘দেশের উত্তাল পরিস্থিতি তো আছেই, কিন্তু আমাদের চারপাশে, শহরে অলিতে-গলিতে প্রতিনিয়ত যা যা ঘটে সেই সব পরিস্থিতি এড়িয়েই বা যাব কোথায়? নেতিবাচকতা সব সময়ই আছে। আর যখন নতুন কোনও প্রাণ পৃথিবীতে আনার কথা কোনও মা-বাবা ভাবেন, তখন থেকেই নানা বিষয় নিয়েই মনে আশঙ্কা দানা বাধে। একটা চিন্তা সব বাবা-মায়ের মাথাতেই থাকে যে আগত সন্তানকে কীভাবে সুস্থ রাখব, নিরাপদে রাখব। কিন্তু তাতে তো জীবনের গতি থেকে থাকে না। নতুন প্রাণ আসেই। তাই এই পরিস্থিতির মধ্যে সন্তানের জন্ম, আলাদা করে আমাকে প্রভাবিত করেনি।’
কিন্তু দেশের অবস্থা নিয়েও বেশ উদ্বিগ্ন অহনা, তিনিও সন্ত্রাসবাদের নিপাত চান ঠিকই পাশাপাশি বর্তমান এই উত্তেজনা কাটিয়ে একটা সুন্দর ভবিষতের দিকে যাতে ভারতবর্ষ এগিয়ে যেতে পারে তাও নায়িকার কাম্য। তাঁর কথায়, 'এই অবস্থা কাটিয়ে উঠে আবার যেন সব আগের মতো হয়ে যায়, আর ভারত যেন আরও শক্তিশালী হয়।'
দেশবাসীর যে রক্ত ঝড়েছে, তার সুবিচার চান অহনা। অভিনেত্রীর মতে, 'আমাদের দেশের যে সব সৈনিকরা সীমান্তে থেকে আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন, আমাদের রক্ষা করছেন, নিজেদের আত্ম-বলিদান দিতেও যাঁরা পিছপা হচ্ছেন না, তাঁদের সেই পরিশ্রম, তাঁদের সেই রক্ত, ঘাম যেন বিফলে না যায়। আর আঘাত হানলে, প্রত্যাঘাত তো করতেই হবে ভারতকে। এ তো আমাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন। যে ২৬ জন দেশবাসীকে আমরা হারিয়েছি, তাঁরা যেন সুবিচার পান, এটুকুই চাইব।'
তবে দেশে হোক বা তাঁর সন্তানের জীবনে যেখানেই উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হোক না কেন সব সময় সন্তানের পাশে নিজেকে পেতে চান অহনা। কোনও পরিস্থিতিতেই তিনি তাঁর সন্তানের হাত ছাড়বেন না। অহনার কথায়, 'আমি আলাদা কেউ নয়, আমি আর পাঁচটা ময়ের মতোই একজন মা, তাঁরাও তো তাঁদের সন্তানের ভালো-খারাপ সব মুহূর্তে পাশে থাকেন, আমিও তেমন করেই আমার আগত সন্তানের পাশে সব সময় থাকতে চাই। কারণ মা তো মা-ই হয়।'
কিন্তু তাঁর এই মাতৃত্বকালীন সময় অহনা তাঁর নিজের মা-কে পাশে পাননি। এই নিয়ে অবশ্য জলঘোলা করতে চান না নায়িকা। তাঁর কথায়, 'আমি সন্তানসম্ভবা হওয়ার খবর পাওয়ার পরও যদি কেউ কুৎসিত মন্তব্য করতে পারেন, তাহলে তাঁর বিষয়ে না আলোচনা করাই শ্রেয়।'
তবে একটা সময় মাতৃ দিবসটা বেশ উদযাপনের মধ্যে দিয়ে কাটত অহনার। তিনি বলেন, 'আর সকলের মতো করে আমিও একটা সময় এই দিনটা উদযাপন করতাম। সেই সময় উপহার কিনতাম, কেকের আয়োজন করতাম।' তবে সেই সবই এখন অতীত, পিছনে ফেলে আসা সেই দিনগুলোকে আর দেখতে চান না নায়িকা। মিসও করেন না। স্বামী দীপঙ্করকে পাশে নিয়ে দিব্যি কেটে যাচ্ছে তাঁর এই মা হওয়ার জার্নি।
অনেকটা অল্প বয়সে মা হচ্ছেন অহনা। যদিও খুব ভেবেচিন্তে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তেমনটা নয়। তাঁর কথায়, 'আমি কোনওদিনই খুব ভাবনা চিন্তা করে কিছু করি না। আমরা কখনওই খুব বেশি পরিকল্পনা করে কোনও কাজ করিনি। একটা সময় মনে হয়েছিল আমাদের রেজেস্ট্রি করে নেওয়া দরকার, তখন তাই করেছি। তারপর একেবারে উপহারের মতো আমাদের সন্তান আমাদের জীবনে এসেছে, ওকেও আমরা সাদরে গ্রহণ করেছি।' পাশাপাশি নায়িকা জানান দীপঙ্কর খুব আদরে যত্নে রাখেন তাঁকে।
মাতৃত্বকালীন এই সময় স্ত্রীয়ের কীভাবে যত্ন নিচ্ছেন দীপঙ্কর? প্রশ্নে একরাশ হেসে রূপটানশিল্পী বলেন, 'এখন আলাদা করে যত্ন নিচ্ছি তেমনটা না। প্রথমদিন থেকেই আমি অহনা এভাবেই যত্নে রাখার চেষ্টা করতাম।' তাছাড়াও স্ত্রীকে একদিন নিজে হাতে মটন কিমা রান্না করেও খাইয়েছিলেন দীপঙ্কর। তবে সবটা তাঁর পক্ষে রান্না করা সম্ভব হয় না। দীপঙ্করের কথায়, 'রাত দুটোর সময় কখন বলে কেক খাব, আবার কখনও আইসক্রিমের জন্য বায়না করে। তাই সেই সব আমাকে ফ্রিজে মজুত করে রাখতে হয়। তাছাড়া বিভিন্ন চকোলেট তো আছেই।'
সবটা মিলিয়ে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে স্বামীকে পাশে নিয়ে, হাসি মুখে কাটিয়ে দিচ্ছেন হবু মা অহনা। তাঁর বিশ্বাস দেশের এই উত্তেজনায় ভরা পরিবেশ একদিন শান্ত হবে, সন্ত্রাসবাস নিপাত যাবে। সুন্দর সুস্থ একটা পৃথিবীতে বেড়ে উঠবে তাঁর আগত সন্তান। এখন তাঁর মন জুড়ে কেবল একটাই প্রার্থনা, ‘সীমান্তে সেনারা যেন সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন। দেশের প্রতিটা মানুষ যেন সুস্থ থাকেন।’
